মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, পটুয়াখালী।পটুুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের নমোস্লুইগেট বাজারে গতকাল বিকেল সারে ৫ টার সময়ে চরবাংলা গ্রামের দুই যুবকের মাথা কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রাম ছারা করেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গতকাল ৭ ‘জুন বুধবার বিকেলে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আবাসনে একটি বিয়ে বাড়িতে যায় ঐ দুই যুবক ।
বিয়ে বাড়িতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মন্টু প্যাদার মেয়ের সাথে কথা বলেতে দেখে বিয়ে বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় জনসাধারণ। বিষয়টি জানা জানি হলে মেয়ের আপন ভাই মোঃ সাইদুল ইসলাম ও স্থানীয় জনসাধারণসহ ঐ দুই যুবককে ধরে নিয়ে যায় ৮নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: সায়েম গাজীর অস্থায়ী কার্যালয় নমো স্লুইসগেট বাজারে। পরে ঐ দুই যুবকেদের জিজ্ঞাসা শেষে স্থানীয় বাজারের জনসাধারণের সম্মুখে ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর নির্দেশে – মোঃ হযরত মাঝি ও হাদী হাওলাদার মিলে চরবাংলা গ্রামের মো: ইউসুব হাওলাদারের ছেলে মোঃ তুহিন ও লিটন গাজীর ছেলে কালুর মাথা কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়েদেয় বলে স্থানীয় জনসাধারণ ও ভূক্তভোগী পরিবার। ভূক্তভোগী দুই যুবক বলেন, বিয়ে বাড়িতে ঐ মেয়ের সাথে পূর্ব থেকে পরিচিত, তাই কথা বলেছিলাম, আর এ ঘটনা দেখে মেয়ের বড় ভাইসহ আরো লোকজন ধরে নিয়ে মেম্বার সায়েম গাজীর কাছে নিয়ে গেলে আমাদের মারধর করে মাথার চুল কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রাম ছাড়া করে। আমরা লোকলজ্জার ভয়ে এখন পালিয়ে থাকি। আমরা সমাজে কিভাবে বাঁচবো? সুষ্ঠ বিচার না হলে নিজেদের জীবন দিয়ে দিবো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
তারা আরও জানায়, যদি কোন অপরাধ করেও থাকে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইনকানুন আছে। তবে এটা কোন ধরনের বিচার? মাথা কামিয়ে আলকাতরা দিয়ে গ্রাম ছাড়া করলো।
এবিষয়ে ভূক্তভোগী কালুর পিতা মোঃ লিটন গাজী বলেন, আমার ছেলে এমন কি অপরাধ করেছে? যার কারনে মাথা কামিয়ে আলকাতরা দিয়েছে। তারা ঘটনার পরে লোকলজ্জায় বন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে। যানিনা কখন কি ঘটে আল্লাহ্’ই জানে, আমি এ ঘটনার আইনি সুষ্ঠ বিচার চান বলে দাবী করেন।
এদিকে মুল ঘটনার বিষয়ে মেয়ের বাড়িতে গেলে,তার ভাই মুঠোফোনে মোঃ সাইদুল বলেন, ঐ যুবকরা আমাদের মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে বিরক্ত করতো, বিয়ে বাড়িতে ছেলেদের পেয়ে আমরা মেম্বার সায়েম গাজীর কাছে নিয়ে গেলে বিচার শালীসির মাধ্যমে সেলুন এর মেশিন দিয়ে তাদের মাথা কামিয়ে সতর্ক করেছেন। তবে আলকাতরা কে বা কারা।লাগিয়েছে আমার জানা নেই বলে ঘটনার ধামা চাপার চেষ্টা করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ সায়েম মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হওয়ায়, গা ঢাকা দেন। পরে রাত আটটার পরে কল করে তিনি ঐ দুই যুবকের মাথা কামায়নি! ছেটে দিয়েছি বলে তার দোষ অস্বীকার করেন।
মাথা কামিয়ে দেয়ার বিষয়ের স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হাসান সরদার বলেন, একজন ইউপি সদস্য কিভাবে জনসম্মুখে দুইজন যুবককের মাথা কামিয়ে দেয়া এটা কোন ধরনের আইন আমার জানা নাই। ঘটনার পরে ঐ দুই যুবক লোকলজ্জায় বন জঙ্গলে লুকিয়ে ছিলো। তার বাবা ও স্থানীয় জনসাধারণ তাকে পাশের একটি জঙ্গল থেকে সকালে বাড়িতে নিয়ে আসে। তারা এ লজ্জাজনক ঘটনায় মানষিক ভার সাম্য হারিয়ে ফেলছে। যে কোন সময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই যারা এ নেক্কারজনক ঘটনাযারা ঘটিয়েছেন, তাদেরকে অতিদ্রুত আইন বিচারের দাবী ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এব্যাপারে চরবিশ্বাস ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সী বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে বলেন জানতে পেরেছি ঐ দুই যুবক বিয়ের বরযাত্রী ছিলো, বিয়ে বাড়িতে কোন এক মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখে স্থানীয়রা। এবিষয়ে নিয়ে কথা কাটা- কাটি হলে তাদের ধরে মাথা কামিয়ে দিয়েছে বলে ভূক্তভোগী পরিবার আমাকে জানিয়েছে। তবে যেই এ ঘটনা করে থাকুক এটা মোটেও ঠিক হয়নি এবং মানবাধিকার লংঘন বলে তিনি মন্তব্য করে এবং যে’ই এই ঘটনা করে থাকুক আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ।
এ ঘটনার বিয়য়ে গলাচিপা থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, ঘটনাটি নেক্কারজনক। এবং ভূক্তভোগী পরিবারকে সর্বচ্ছ আইনী সহায়তা করা হবে।
##