মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার মাদারীপুর জেলা কমিটি গঠন শশীভুশনে পৈত্রিক সম্পত্তি জোর করে দখলের পায়তার শিরোনামের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা।। মাদারীপুরে তিতু মুন্সির সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা!থানায় অভিযোগ  মাদারীপুরে চারতলা নতুন ভবনের এক তলা শুভ উদ্বোধন ভূমি অফিস কতৃক আয়োজিত ভূমিসেবা সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন। সভাপতি শামীম, সম্পাদক রনি বিক্রমপুর টঙ্গীবাড়ী প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন মহেশখালীতে শানে সাহাবা খতীব কাউন্সিলের আহবায়ক কমিটি গঠন; রাহমত উল্লাহ আহবায়ক, আজিজুর রহমান সদস্য সচিব নুরুল করিম নির্বাচন সামনে রেখে নাশকতার চেষ্টা করলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে’–শাজাহান খান গলাচিপায় পুকুরে চাষকৃত মাছ ধরার অভিযোগ দৈনিক ভোরের অঙ্গীকার অনলাইন নিউজ পোটাল উদ্বোধন

পাচারের অর্থ উদ্ধারের উদ্যোগ: ফলপ্রসূ হতে হবে

অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘অর্থ পাচার প্রতিরোধসংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটি’র বৈঠকে সুইস ব্যাংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের ক্ষেত্রে মডেল হিসাবে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডের কর্মকৌশল অনুসরণ করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই আমরা। তবে এটি কতটা ফলপ্রসূ হবে, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, উল্লিখিত দেশগুলো কীভাবে অর্থ উদ্ধার করছে, তা জানা নেই আমাদের।

এছাড়া তাদের মত করে আমরাও অর্থ উদ্ধারে আদৌ সক্ষম হব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশ থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে টাকা পাচার হচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, টাকা উদ্ধার প্রক্রিয়া সফল করতে হলে যেসব দেশে টাকা পাচার হয়েছে, সেসব দেশে তদন্ত টিম পাঠিয়ে অনুসন্ধান করা দরকার; বিশেষ করে ওইসব দেশ থেকে টাকা পাচারকারীদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের বর্তমান অবস্থা শনাক্ত করা জরুরি। এরপর যদি দেখা যায় টাকা পাচারকারী একজন সরকারি কর্মচারী, তাহলে তাকে বরখাস্ত করতে হবে; ঋণখেলাপি হলে ঋণের টাকা ফেরত নিতে হবে। পাশাপাশি সবার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় অগ্রসর না হলে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে না বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা, যা আমলে নেওয়া উচিত।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থ পাচার অন্যতম প্রতিবন্ধক। বছর দুয়েক আগে একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ‘ডেলিভারিং এসডিজি ইন বাংলাদেশ : রোল অব নন-স্টেট অ্যাকটরস’ শীর্ষক আলোচনাসভায় ‘এসডিজির ৪ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি’ শীর্ষক বইয়ে জিএফআই-এর একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়েছিল, দেশ থেকে প্রতিবছর নানাভাবে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার হচ্ছে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এর পরিমাণ ১৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার (১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যেতে পারে। অর্থ পাচারের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির সফল বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে, যা মোটেই কাম্য নয়।

বিদেশে অর্থ পাচার গুরুতর অপরাধ। এজন্য শাস্তির বিধান রেখে আইনও করা হয়েছে। তারপরও টাকা পাচারের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না কেন, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। অর্থনীতিবিদদের মতে, টাকা পাচারের ঘটনা ঘটছে মূলত সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে। দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, দেশে সঞ্চয় বাড়লেও বিনিয়োগ বাড়ছে না। কাজেই গ্যাস-বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা অপরিহার্য। টাকা পাচারের আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বেড়েছে বলেই অর্থ পাচারের হারও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে কোনোরকম শৈথিল্য প্রদর্শন করা উচিত নয়। বস্তুত দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে টাকা পাচারের ঘটনাকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। আর তাই পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কোনো টাকা যাতে দেশ থেকে পাচার না হতে পারে, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া উচিত।



ফেসবুক
ব্রেকিং নিউজ